বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক মানুষই কৃষি পেশার দিকে ঝুকছে। বিভিন্ন ধরনের খামার করার প্রবনতা শিক্ষিত যুব সমাজে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরী হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা। এসকল উদ্যোক্তারা সাফল্য ভাবে গড়ে তুলছে হাঁসের খামার, মুরগির খামার, ছাগলের খামার, গরুর খামার, নার্সারী, ফলের বাগান, মৎস্য খামার ইত্যাদি। এসকল খামারের তথ্য বর্তমানে খুব সহজেই ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা যায় বলে খামার করার আগ্রহ সবার মধ্যে তৈরী হচ্ছে। এসব খামারের মধ্যে একটি লাভজনক ব্যবস্যা হল হাঁস পালন। অনেকেই না জেনে বা অল্প জেনে হাঁস পালন শুরু করেছেন। যার কারনে শুরুতেই ভূল দিকনির্দশনার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
হাঁস পালনের পূর্বশর্ত সমূহ:
হাঁস পালন শুরুর করার আগে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আপনি যদি একদিনের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন তবে এ বিষয়ে অবশ্যই ভালভাবে ধারনা নিয়ে নিবেন। এর সাথে সাথে যেসকল প্রস্তুতি নিতে হবে তা হল-
- ডিম পাড়া হাঁসের প্রতিটার জন্য ১ স্কয়ার ফিট জায়গা নির্ধারন করে ঘর নির্মান করতে হবে।
- ঘরের মেঝে শুকনা থাকতে হবে।
- খাবার ও পানির পাত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।
- এদের পানিতে বিচরন করানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
একদিনের হাঁসের বাচ্চার পরিচর্যা
- একদিনের বাচ্চা সংগ্রহের পর ঘরে রেখে স্টার্টার ফিড খাওয়াতে হবে।
- প্রতি ১০০ পিচ বাচ্চার জন্য ৩-৪ টি পানির পাত্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
- পানির পাত্রের চারিদিকে পাথর বা ছোট ছোট ইটের টুকরা দিয়ে ভরে দিতে হবে যাতে করে বাচ্চারা পানি খাওয়ার সময় শুধুমাত্র ঠোটটুকু ভেজাতে পারে।
- সংগ্রহের প্রথম ৮ ঘন্টা প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম পরিমান লাইসোভেট স্যালাইন মিশিয়ে দিতে হবে।
- এরপর এমক্সাসিলিন ১ গ্রাম/লিঃ + কলিষ্টিন ১ গ্রাম/লিঃ পানিতে মিশিয়ে টানা ৪ দিন খাওয়াতে হবে।
- ৫ম দিনে সাদা পানি দিতে হবে।
- ষষ্ট দিনে থায়ামিন ২ গ্রাম/লিঃ পানিতে মিশিয়ে টানা ৫ দিন খাওয়াতে হবে।
- ১১ তম দিনে সাদা পানি দিতে হবে।
- ঘরের মেঝেতে অবশ্যই প্লাষ্টিকের বা চটের বস্তা ব্যবহার করতে হবে।
- রাতে প্রতি ১০০ হাঁসের জন্য ২-৩ টি করে ১০০ ওয়াডের সাধারন বাল্ব মেঝে হতে ১ মিটার উচ্চতায় টাঙ্গিয়ে তাপের ব্যবস্থা করতে হবে।
- বাচ্চাগুলো যদি বাল্বের নিচে বেশি জরোসরো হয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে তাপ কম হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাল্ব একটু নিচু করে দিতে হবে।
- বাচ্চাগুলো যদি বাল্ব হতে দূরে গিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তবে বুঝতে হতে তাপ বেশি হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাল্ব একটু উচু করে দিতে হবে।
- বাচ্চাগুলো রাতে একটার নিচে আরেকটা যাতে চাপা না পরে এ জন্য ৩-৪ রাত বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
- হাঁসের বাচ্চা কোন অবস্থাতেই যেন ২১ দিনের পূর্বে পানিতে না ভেজে।
এভাবে এগারো দিনের ডোজ শেষ করার পর হাঁসের বাচ্চার গতিবিধির উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পরামর্শ গ্রহন করতে হবে। বাচ্চা নেয়ার সময় অবশ্যই ভাল মানের, ভাল জাতের ও এ গ্রেডেরে বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে।
ভিডিও থেকে আরও সুন্দর ধারনা নিন একদিনের হাঁসের বাচ্চার পরিচর্যা সমন্ধে।